''A Brief Account of Modern Theatre''
ACTIVISMFEATUREDBENGALICULTURE


নাটক হলো সাহিত্যের সেই বিভাগ যেটা মঞ্চে উপস্থাপিত হয়।
বৈশিষ্ট্যগত দিক থেকে পূর্বতন থিয়েটারের থেকে ভঙ্গিতে ধরনের আর প্রয়োগ শৈলীতে সম্পূর্ণ নতুন হয় বলেই এই থিয়েটারকে বলা হয় মডার্ন থিয়েটার বা আধুনিক থিয়েটার ।
রিয়ালিজম রাশানালিজম পলিটিকাল থিয়েটার ডিডাক্টিজম আর ফেমিনিজম এগুলো হচ্ছে গিয়ে মডার্ন থিয়েটারের মুখ্য কিছু বৈশিষ্ট্য।
রিয়ালিজম
রিয়ালিজম হচ্ছে বাস্তব জীবনে ঠিক যেমনটা ঘটে সেটাকে অপরিবর্তিতভাবে নাটকে বা সাহিত্যে বিষয়বস্তু করে তোলা যেমন করেছেন সাদাত হোসেন মান্টো।
আধুনিক থিয়েটারে রিয়ালিজম হচ্ছে একটা অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হেনরিকি ইবসেনকে মডার্ন থিয়েটারের জনক বলে মনে করা হয় তার নাটক গুলিতে বাস্তবধর্মী বৈশিষ্ট্য গুলো দেখতে পাওয়া যায়
বৈবাহিক জটিলতা, সামাজিক অবিচার, লিঙ্গ বৈষম্য, প্রশাসনিক অবিচার, ধন তান্ত্রিক সমাজ আর শো শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যেকার দ্বন্দ্ব এইগুলো হেনরিক ইবসেন এর নাটকের বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে বারবার যেমন ডলস হাউস
পলিটিকাল থিয়েটার
রিয়ালিস্টিক ড্রামার মত এই ধরনের ড্রামাতে ইতি রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থাকে। দা ককেশিয়ান চক সার্কেল এইরকমই একটি রাজনৈতিক দৃষ্টিভাবাপন্ন নাটক। নাট্যকার ব্রেখট। সমাজের সাধারণ যে চরিত্রগুলো আমরা দেখতে পাই সেই চরিত্রগুলোকে দিয়েই ব্রেখট নাটকে তুলে ধরেছেন সামাজিক দুর্নীতি, রাজনৈতিক শাসনের অসারতা। এই ধরনের নাটক দিয়ে লেখক বা নাট্যকার তাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।
ৱ্যাশনালিসম
যুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে সত্যকে নিরূপণ করার ধারণাকেই বলা হয় রেশনালিজম। রেশনালিস্ট বা যুক্তিবাদীরা মনে করে মানুষ সত্যকে খুঁজে পাবে তার যুক্তি এবং বুদ্ধি দিয়ে অন্তর্দৃষ্টির উপর নির্ভর করে নয়, ধর্মবিশ্বাস এর উপর নির্ভর করে নয় , অথবা শুধু ইতিহাস ঘেঁটে নয়। রেশনালিস্ট লেখকেরা তাদের লেখাগুলোতে বারবার দ্বারস্থ হয়েছেন যুক্তি আর কারণের উপর ঈশ্বরের উপর নির্ভর করে নয়। মানুষই তার জীবনের একমাত্র নিয়ন্ত্রণ শক্তি কোন ঈশ্বর বা দৈবিক শক্তি নয়।
এই ধরনের লেখায় বারবার কার্য এবং কারণ সম্পর্কে মানে কজ এন্ড এফেক্ট সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে কারণ বারংবার যুদ্ধের ফলে মানুষের মন থেকে যাবতীয় বিশ্বাস ঈশ্বরের উপর চলে গেছে তাই মানুষ এবং তার কর্মকাণ্ডই মানুষের একমাত্র আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ডাইডাকটিজম
আধুনিক থিয়েটারের এটাও একটি অন্যতম লক্ষণ। এক্ষেত্রে নাটক শুধুমাত্র মনোরঞ্জনের জন্য লেখা হয়নি নাটক লেখা হয়েছে শিক্ষামূলক উদ্দেশ্য নিয়েও। এই ধরনের নাটকের দুটো দৃষ্টিভঙ্গি থাকে একটা হচ্ছে ডেস্ক্রিপ্টিভ আরেকটা হচ্ছে পারস্পেক্টিভ।
হেনরিক ইভসেন, জর্জ বার্নার্ড শ, আন্তন চেকভ descriptive ধারায় তাঁদের নাটকগুলিকে লিখেছেন। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ঘটনাগুলির বিবরণ টুকু দিয়ে দেওয়া হয়েছে।।
পার্সপেক্টিভ ধারায় শুধুমাত্র শুধুমাত্র বিষয়বস্তুকে সমস্যাটি কিভাবে সমাধান করা যায় তারও উত্তর নাটকের মধ্যে নাট্যকার দিয়ে দিয়েছেন। এই ধরনটি বারবার ব্যবহার করেছেন ব্রেস্ট তার প্রভূত নাটকে এবং তার নাট্য পদ্ধতিতে।
আধুনিক নাটক মূলত বোধ প্রতিষ্ঠার নাটক শুধুমাত্র কিছু অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সঞ্চালন নির্ভর অ্যাকশনের সমষ্টি নয়। আধুনিক নাট্যকারেরা মঞ্চকে ব্যবহার করেন তার নাটকে বর্ণিত বোধটি বা চিন্তাটি দর্শকের মনে ছড়িয়ে দিতে। দর্শকের মনন যেন জেগে ওঠে নাটকটি দেখতে দেখতে তার অনুভূতির থেকে বেশী করে। সেইকারণের জন্যই আধুনিক নাটক অনেক বেশি বুদ্ধিদীপ্ত পূর্বতন সময়কার নাটক গুলির থেকে।
ফেমিনিজম
নারীবাদ হল আধুনিক নাটকের আরেকটি অন্যতম মুখ্য উপাদান। বিবর্তন সৃষ্টিকারী নাট্যকার যেমন ইবসেন আর জর্জ বার্নাড শ এনারা তাদের নাটকে বাস্তবসম্মত নারী চরিত্র তৈরি করেছেন।
আগেকার যুগের নাটকের দেখানো হয়েছে যে মেয়েরা ভীষণ পুরুষ তন্ত্রের উপর নির্ভরশীল ফলতো তারা অনেক বেশি পুরুষদের দ্বারা নির্যাতিত কিন্তু আধুনিক যুগের নাটকে দেখানো হলো মেয়েরা অনেক বেশি স্বাধীন পরিস্থিতির সঙ্গে অনেক বেশি সংগ্রাম করে বেঁচে থাকছে। এই ধরনের নাটকগুলোতে মহিলারাই মুখ্য এবং প্রধান চরিত্র হয়ে উঠছে যেমন হেডা গেবলার।
অ্যাবসার্ডিসম
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই ধরনের নাটকগুলো সৃষ্টি হয়েছে ওই 1950 সালের সময় থেকে।
অস্তিত্ববাদই হল এই নাটকের মুখ্য উপজীব্য।
মানুষের অস্তিত্বের যখন কোন অর্থ থাকে না যখন মানুষের অস্তিত্বের কোন উদ্দেশ্য থাকে না মানুষের অস্তিত্ব যখন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তখন কি হয় সেটাই এই ধরনের নাটকে দেখা যায়। এই ধরনের নাটকের গঠনগত বৈশিষ্ট্য হলো বৃত্তাকার। নাটকের ঘটনার শুরু ঠিক যেখান থেকে ঘটনার শেষও ঠিক সেখানেই এসে হয়। যুক্তি আর বাস্তবতা বাদের এখানে অভাব দেখা যায়। পরিণতি হল নীরবতা। স্যামুয়েল বেকেট ইউজিন আইনেসকো প্রমুখও হলেন এই ধারার অন্যতম নাট্যকার।
কমেডি অফ ম্যানার
পুরাতন নাটধারা থেকে যে উপাদানটিকে আবার বাঁচিয়ে তোলা হলো এই আধুনিক নাট্যধারায় সেটা হল কমেডি অফ ম্যানার।
অস্কার ওয়াইড প্রমুখদের লেখনীতে দুর্দান্তভাবে এই নাট্যধারাটিকে ব্যবহার করা হয়েছে। এই রচনাশৈলীতে সমাজের একটি বিশেষ শ্রেণীর আচরণ,ক্রিয়াকান্ড, জীবন ধারণ পদ্ধতি, এবং সামাজিক ধরনকে শ্লেষাত্মকভাবে দেখানো হয়।


Sanghita Chakraborty
Artist







